আমাদের দেশে কবুতর পালন একটি লাভজনক পেশা। অনেকেই শখের বসে আবার কেউ কেউ বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পালন করে থাকেন। কবুতর থেকে লাভবান হতে হলে কবুতরকে কৃমিমুক্ত রাখা খুবই জরুরি।
কৃমির লক্ষন ও ঔষধ খাওয়ানোর নিয়মঃ
কৃমির কিছু লক্ষন –
অনেক দিন ধরে পাতলা পায়খানা
বেশি পানি পান করা
ডানা ঝুলে যাওয়া
ওজন কমে গিয়ে বুকের হাড্ডি বের হয়ে আসা চুপচাপ বসে থাকা শুধু খাওয়ার সময় উঠা উৎপাদন কম হওয়া
ডিম না দেয়া
পায়খানার সাথে ক্রিমি আসা বা পরা
কখন করাবেন কোর্স?
ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় , খালি পেটে করাবেন
গরমের দিনে করালে খুব ভোরে বা অনেক রাতে যখন খাবার হজম হয়ে যায় , প্রয়োজনে ওই দিন খাবার একটু আগে দেওয়া ভাল তাতে রাতে খাবার আগে হজম হবে ।
অবশ্যই সুস্থ কবুতরকে করাতে হবে ।
অথবা গরমের দিনে হাল্কা বৃষ্টি হচ্ছে এমন আবহাওয়ায় দেওয়া ভাল ।
একটানা ৩/৪ দিন বৃষ্টি হয় তখন না দেওয়া উচিৎ
পূর্ব ও পরবর্তিতে করনীয়ঃ
লিভার টনিক ও স্যালাইন –
লিভা ভিট, লিভা টোন বা ইকটার্ন দিনার হামদার্দ (অইগুলো না পেলে) দিতে পারেন ।
স্যালাইনঃ
ইলেক্ট্রনিল বা গ্লুকোলাইট দিতে পারেন ।
কৃমির ঔষধ দেওয়ার আগে ২ দিন, ঔষধ দেওয়ার দিন & দেওয়ার পর আরও ২ দিন দিতে পারলে ভাল ।
আর না পারলে লিভার টনিক ও স্যালাইন ওষুধ দেওয়ার দিন , এর পর আরও দুইদিন খাওয়ান ।
নিয়মঃ
১) ১ লিটার পানিতে ২ মিলি/ গ্রাম করে মিক্স করে ওই পানি খাবার পানি হিসাবে খেতে দিন ।
২) দৈহিক ওজন অনুসারে ঔষধের পানির পরিমাপ নির্ণয়ঃ
কবুতরের আনুমানিক ওজন ২০০-৩০০ গ্রাম হলে ১০ মিলি ।
দৈহিক ওজন ৩০০-৫০০/৭০০ গ্রাম হলে ১৫-২০ মিলি করে খাওয়ান ।
৩) কৃমির কি ঔষধ দিতে বা খাওয়াতে পারি?
Elcaris vet (square )
Poulnex (Novartis )
Avinex ( Reneta )
Acimec (ACI) ইত্যাদী
৪) ঔষধ তৈরির নিয়মাবলি ও পরিমাপঃ
ঔষধ ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম ঔষধ মিশিয়ে ওই পানি প্রতি কবুতরকে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় খালি পেটে ১০ মিলি করে সিরিঞ্জ দিয়ে খাইয়ে দিন ।
কবুতরের আনুমানিক ওজন ২০০-৩০০ গ্রাম হলে ১০ মিলি ।
দৈহিক ওজন ৩০০-৫০০/৭০০ গ্রাম হলে ১৫-২০ মিলি করে খাওয়ান ।
৫) কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর পদ্ধতিঃ
ঔষধ এর পানি দিয়ে রাখলে অনেক সময় অনেকে বেশি পানি খায় , অনেকে কম খায় , অনেকে খায়না তাই ঝামেলা হয় ।
যেহেতু ৬০/৯০ দিন পর পর তাই একটু কষ্ট হলে ও ধরে সিরিঞ্জ দিয়ে খাওয়ানো ভাল ।
৬) কতক্ষন পর কি করতে হবেঃ
ঔষধ খাওয়ানোর ৩ ঘণ্টা পর লিভার টনিক / লিভা ভিট বা লিভা টোন বা হামদার্দ এর ইকটার্ন দিনার ২ মিলি আর ইলেকট্রমিন স্যালাইন ২ গ্রাম করে ১ লিটার পানিতে মিক্স করে খেতে দিন । কৃমির ওষুধ দেওয়ার পর বমি করতে পারে । আল্লাহ্ ভরসা ভয় পাবেন নাহ । আর ওষুধ দেওয়ার ৫ ঘণ্টা পর খাবার দিন এর আগে না দেওয়া ভাল । আর ওই দিন ৩/৫ ঘণ্টা পর কবুতরের খাঁচা , খাঁচার নিচের ময়লা , ট্রে পরিষ্কার করুন ।
৭) এক কোর্স থেকে আরেক কোর্স এর মেয়াদঃ
৬০-৯০ দিনের মধ্যে একবার করে এই কোর্স করা ভাল ।
৮) কাদের জন্য নিষেধ?
২/১ দিনে ডিম দিবে বা ২/৭ দিনের বাচ্চা আছে এমন কবুতর বা অসুস্থ কবুতর কে এই কোর্স করা যাবে নাহ ।
৯) যারা বাদ পরবে তাদের কি করবেন?
পরে তারা ডিম পাড়লে ৪/৫ দিন পর আর বাচ্চা ৮/১০ দিন বয়স হলে তাদের বাবা মা কে এবং অসুস্থ কবুতর সুস্থ হলে বা নতুন কবুতর কিনে আনলে কৃমির লক্ষণ থাকলে ,আলাদা করে ওষুধ খাইয়ে নিবেন ।
১০) কয়দিন দিবেন বা করাবেন?
৬০-৯০ দিনে ১ দিন ১ বার/ ১ বেলা দিবেন কখনোই ২ দিন বা দুই বেলা দিবেন না।
(পরিমার্জিত ও সংগৃহীত)
আমি ডাঃ শ্রাবণ হাসান সজল
একজন ভেটেরিনারিয়ান,তাই ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ সেক্টরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে দেশের শিক্ষিত সমাজকে লাইভস্টক সেক্টরে কাজ করতে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা করছি।সেই লক্ষ্যে ফেসবুক,ইউটিউব এবং ব্লগ সাইটের মাধ্যমে ফার্মারদের নানাবিধ পরামর্শ প্রদান করতে চেষ্টা করি।ইতোমধ্যে আমার ইউটিউব চ্যানেল ১ লক্ষাধিক সাবস্ক্রাইব অর্জন করায় ইউটিউব থেকে চ্যানেলটি ভেরিফাইড হয়েছে।