গরু মোটাতাজাকরণে ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরি ও ব্যবহার পদ্ধতির বিস্তারিত
আমাদের দেশের গবাদী পশু সাধারনত খড় খেয়ে জীবন ধারন করে। তার পরও অনেক সময় খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা যায়। ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক একটি শক্তিশালী প্রােটিন সমৃদ্ধ জমাট খাদ্য। এর মধ্যে প্রয়ােজনীয় খনিজ ও ভিটামিন দেওয়া
থাকে। খড়ের সাথে পরিপাক খাদ্য হিসেবে ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক খাওয়ালে পশুর শরীরে মাংস এবং চর্বি বাড়ে।
ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরীর পদ্ধতিঃ
ব্লকের মধ্যে শতকরা নিম্নরূপ উপাদান থাকেঃ
উপাদানঃ
১) মোলাসেস /চিটাগুড় – ৫০-৬০ ভাগ।
২) গমের ভুষি – ২৫-২৬ ভাগ।
৩) ইউরিয়া – ৮-৯ ভাগ।
৪) পাথরী চুন – ৫-৬ ভাগ
১০ কেজি পরিমান ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক তৈরীর পদ্ধতি নিম্নে দেওয়া হইলঃ
১) ৬ কেজি পরিমান মোলাসেস বা চিটাগুড় একটি ড্রামে/লােহার কড়াইয়ে নিয়ে উননে/চুলায় দিয়ে তাপ দিতে হবে এর সাথে ২.৫-৩.০ কেজি পরিমান ভূষি কড়াইতে নিতে হবে এবং নাড়নী দিয়ে চিটাগুড়ের সংগে মেশাতে হবে।
২) এবার ৩৫ গ্রাম লবন এবং যে কোন ডিবি ভিটামিন (যেমন-ডিবিভিট,Navana) ১০০ গ্রাম মেপে নিয়ে কড়াইতে দিতে হবে।
৩) এবার ৮০০-৯০০ গ্রাম ইউরিয়া আলাদাভাবে মেপে নিতে হবে।
৪) ৫০০-৬০০ গ্রাম পাথরে চুন ওজন করে মোলাসেস তৈরী করার পূর্বে দিনে সামান্য পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
৫) ওজনকৃত চুন, ইউরিয়া, লবন ও ভিটামিন ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে এবং কড়ইয়ে ছেড়ে দিতে হবে।
৬) এবার কড়াই বা ড্রামটি আগুন/চুলা থেকে নামিয়ে এবং নাড়নি ভালভাবে নাড়াচাড়া করুন যতক্ষন পর্যন্ত না চিটাগুড়ের আঠা আঠা জমাট ভাব আসে।
৭) চিটাগুড়, ভুষি, চুন, ইউরিয়া, খনিজলবন ও ভিটামিন মিশ্রিত মিশন এ নির্দিষ্ট পরিমান ছাঁচের আকার ও ধারন ক্ষমতা যেমনঃ ১ কেজি ওজনের ব্লক তৈরি করা যেতে পারে।
৮) মিশ্রনটি নির্দিষ্ট ছাঁচে/ফরমায় ঢালার পর ছাঁচের মাপ অনুযায়ী ঢাকনা উপরে রেখে চাপ দিতে হবে যেন মিশ্রণটি শক্ত জমাট বেঁধে ছাচের আকারের মত একটি ব্লকে পরিনত হয়।৯) সাবধানতার সহিত ছাঁচটি ব্লক থেকে তুলে নিতে হয় এবং ৩০ মিনিটের মত বাহিরে রেখে দিতে হয়। এ সময়ের মধ্যে ব্লকটি শক্ত হয়ে যায়।
১০) যদি এক সংগে অধিক পরিমান তৈরী করা প্রয়ােজন হয় তবে পলিথিনের মােড়কে আচ্ছাদিত করাই বাঞ্ছনীয়। এতে ব্লকের গায়ে ধুলাবালি লাগার সম্ভবনা থাকে না এবং অনেক দিনের জন্য সংরক্ষণে সহায়তা করে।
ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক খাওয়ানাের নিয়মাবলীঃ
প্রতিদিন গরুকে ২৫০-৩০০ গ্রাম ইউরিয়া মোলাসেস ব্লক শুষ্ক অবস্থায় খাওয়াতে হবে। ব্লকটি গরু প্রথম প্রথম খেতে না চাইলে ব্লকের উপর লবন বা ভুষি ছিটিয়ে দিতে হবে এবং ব্লক খাওয়ানাের পাশাপাশি গবাদী পশুকে অন্যান্য স্বাভাবিক খাবার যেমনঃ খড়, তাজা ঘাস, দানাদার খাদ্য, পানি ইত্যাদি খাওয়ানাে যায়।
Credit: Mukti Mahmud
আমি ডাঃ শ্রাবণ হাসান সজল
একজন ভেটেরিনারিয়ান,তাই ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ সেক্টরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে দেশের শিক্ষিত সমাজকে লাইভস্টক সেক্টরে কাজ করতে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা করছি।সেই লক্ষ্যে ফেসবুক,ইউটিউব এবং ব্লগ সাইটের মাধ্যমে ফার্মারদের নানাবিধ পরামর্শ প্রদান করতে চেষ্টা করি।ইতোমধ্যে আমার ইউটিউব চ্যানেল ১ লক্ষাধিক সাবস্ক্রাইব অর্জন করায় ইউটিউব থেকে চ্যানেলটি ভেরিফাইড হয়েছে।