বাছুরের জন্মের প্রথম মাসেই উপসার্গটি সবচেয়ে বেশী দেখা যায় তা হলো ‘‘কাফ স্কাউর’’ বা বাছুরের সাদা উদরাময় বা বাচুরের দাস্ত।
রোগের কারণঃ
বিভিন্ন ধরণের জীবানুর কারণে কাফ স্কাউর হয়। বিভিন্ন ধরণের ভাইরাস (রোটাভাইরাস, করোনা ভাইরাস ইত্যাদি), ব্যাকটোরিয়া (ই. কলাই, সালমোনেলা), প্রোটোজোয়া (ক্রিপ্টোস্পোরিডিয়া, কক্সিডিয়া) প্রভৃতি জীবাণুর কারণে রোগটি হতে পারে। একই সাথে একাধিক জীবাণু রোগটির কারণ হিসাবে দেখা দিতে পারে। একটু বয়স্ক বাছুরের আন্ত্রিক পরজীবির কারণে অনেক সময় কাফ স্কাউর দেখা দিতে পারে। সাধারণত এক সপ্তাহ থেকে তিন সপ্তাহের বয়সের বাছুর এ রোগে আক্রান্ত হয়।
লক্ষণঃ
- দুর্গন্ধ যুক্ত ও সাদা/হলুদ/ঘিয়া রক্তবর্ণ ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হয়।
- প্রথম দিকে শরীরে জ্বর থাকে এবং পরর্বীতে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়েও কমে যায়।
- অন্ত্রের এপিথেলিয়াল স্তর ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় তরল পায়খানার সাথে নির্গত হলে শরীরে পানিশুন্যতার সৃষ্টি হয়, ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বিনষ্ট হয়, শরীরের শক্তি শেষ হয়ে যায়। এই অবস্থা চলতে থাকলে বাছুর মারা যেতে পারে।
- পায়খানা পশুর পিছন দিকে লেজে লেগে থাকে এবং গ্যাস থাকায় পায়খানায় ফেনা হয।
- চক্ষু কোঠরে বসে যায় ও পিঠ বাঁকা হয়ে যায়।
প্রতিরোধঃ
নিয়মিত স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে।
- বাছুরের জন্মের ১ ঘন্টার মধ্যে ২ লিটার এবং পরবর্তী ১২ ঘন্টার মধ্যে আরো ২ লিটার ‘‘কলষ্ট্রাম’’ খাওয়ানো উচিত। অন্ততঃ পক্ষে প্রথম ১২ ঘন্টার মধ্যে ২ লিটার কলষ্ট্রাম বা ‘‘শাল দুধ’’ খাওয়ানো জরুরী।
- বাছুরের খাবার পাত্র, পানির পাত্র ইত্যাদি প্রতিবার ব্যবহারের পর স্বাস্থ্য সম্মত উপায়ে পরিস্কার করতে হবে।
- জন্মের পর বাছুরের জন্য উষ্ণ, পরিচ্ছন্ন ও ঠিকমত প্রাকৃতিক আলো-বাতাস চলাচল করে এমন বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
- বাছুরের সঠিক পুষ্টিমান সম্পন্ন খাদ্য প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
চিকিৎসাঃ
ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পরামর্শে নিন্মলিখিত ব্যবস্থাদি গ্রহণ করা যেতে পারেঃ-
- Cotramoxasol Suspension
অথবা Gentamycin Injection - অথবা Otetra-Vet Injection (ওটেট্ট্রা-ভেট ইনজেকশন)
অথবা Trimethoprim Suspension - 10% Dextrose Saline শিরায় প্রয়োগ করতে হবে অথবা
- 25% Dextrose Saline মুখে খাওয়াতে হবে।
- এ রোগ থেকে সেরে উঠার পরও বাছুর অনেক দিন অনেক দুর্বল থাকে। এক্ষেত্রে বি-৫০ ভেট ইনজেকশন প্রতিটি বাছুরকে ২ মিঃলিঃ করে পরপর ৫-৬ দিন মাংসে প্রয়োগ করলে খুব দ্রুত বাছুরের স্বাস্থ্য ভাল হয়।
আমি ডাঃ শ্রাবণ হাসান সজল
একজন ভেটেরিনারিয়ান,তাই ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ সেক্টরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে দেশের শিক্ষিত সমাজকে লাইভস্টক সেক্টরে কাজ করতে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা করছি।সেই লক্ষ্যে ফেসবুক,ইউটিউব এবং ব্লগ সাইটের মাধ্যমে ফার্মারদের নানাবিধ পরামর্শ প্রদান করতে চেষ্টা করি।ইতোমধ্যে আমার ইউটিউব চ্যানেল ১ লক্ষাধিক সাবস্ক্রাইব অর্জন করায় ইউটিউব থেকে চ্যানেলটি ভেরিফাইড হয়েছে।