১। বায়োফ্লক (Biofloc) পদ্ধতি কি?
বায়োফ্লক (Biofloc) এক প্রকার যৌবিক ক্রিয়া, যাহা উপকারী অনুজীব বা ব্যাকটেরিয়া (প্রোবায়োটিক) দ্বারা তৈরী করে এবং পানি ও বাতাসের পানিতে ক্ষতিকারক অ্যামোনিয়া দূর করে মাছের জন্য খাদ্য তৈরী করে।সর্বাধুনিক এই প্রযুক্তিতে পুকুরের চেয়ে ১০ গুন বেশি মাছ উৎপাদন সম্ভব। আপনি বায়োফ্লক (Biofloc) সিস্টেমে চাষ করতে পারেন ২ বিঘা পুকুরের সমান মাছ।
বায়োফ্লকে ২ ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কথা মাথায় রাখতে হবেঃ
১। নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়াঃ-
২। হেটেরোট্রপিক ব্যাকটেরিয়া
১.২। হেটেরোট্রপিক ব্যাকটেরিয়া এবং নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে পার্থক্য ঃ-
- হেটেরোট্রপিক ব্যাকটেরিয়া ৩০ মিনিট অন্তর অন্তর ১০০% বৃদ্ধি পায় অর্থ্যাৎ ডাবল বৃদ্ধি পায়।
- নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া ৬-২৪ ঘন্টা অন্তর অন্তর বৃদ্ধি পায়।
মন্তব্যঃ- নাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়া থেকে হেটেরোট্রপিক ব্যাকটেরিয়া বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা উত্তম।
১.৪। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে ব্যাকটেরিয়া কি কি কাজ করেঃ-
১. পানি পরিষ্কার কওে, পানির গুনাগুন ধওে রাখে এবং রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু ধ্বংস করে।
২. পানির বিষাক্ত অ্যামোনিয়াকে সরাসরি আমিন অ্যাসিড বা প্রোটিনে রূপান্তরিত করে।
৩. কার্বনডাইঅক্সাইড শোষণ করে
৪. অক্সিজেন বৃদ্ধি করে।
৫. হেভিমেটাল বা ভারি ধাতু সেটেল করে
৬. মাছের ক্ষতিকর জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করে ফলে মাছের মড়ক হয় না
৭. মাছের ইমিউনসিস্টেম বাড়িয়ে দেয় ফলে মাছ দ্রæত বৃদ্ধি পায়।
২। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে যে সমস্ত বিষয় জানা জরুরীঃ-
১. অবশ্যই এক এর অধিক এয়ার বøয়ার সেট কওে রাখতে হবে
২. বিদ্যুৎ থাকা আবশ্যিক
৩. জেনারেটর রাখতে হবে
৪. বায়োফ্লক পদ্ধতি চালনার জন্য দক্ষ কর্মী থাকতে হবে।
৫. কোন বিষয়ে না জেনে কিছু করা উচিত হবে না। প্রয়োজনে টেকনিক্যাল পরামর্শ নিতে হবে।
৬. পানির গুনাগুন মাপার পেরিমিটার রাখতে হবে।
৭. ছোট ও পিড়নের কারণে আঘাত প্রাপ্ত পোনা মজুত করা যাবে না।
৮. অতি বাচলামি পরিহার করতে হবে।
৯. অদক্ষ কোন প্রতিষ্ঠান দ্বারা প্রতারিত না হয়ে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে দক্ষ ও টেকসই প্রযুক্তি দ্বারা পরিচালিত প্রতিষ্ঠান থেকে পরামর্শ নিতে হবে।
১০. অ্যামোনিয়া বৃদ্ধি পেলে খাবার কম দিতে হবে।
১১. নাইট্রোজেন বৃদ্ধি পেলে অক্সিজেন বাড়াতে হবে।
১২. ফ্লক কম হলে কার্বন (লালী) যোগ করতে হবে।
১৩. ফøক বেশি হলে পানি বের করে দিতে হবে।
আমি ডাঃ শ্রাবণ হাসান সজল
একজন ভেটেরিনারিয়ান,তাই ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ সেক্টরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে দেশের শিক্ষিত সমাজকে লাইভস্টক সেক্টরে কাজ করতে উৎসাহিত করার প্রচেষ্টা করছি।সেই লক্ষ্যে ফেসবুক,ইউটিউব এবং ব্লগ সাইটের মাধ্যমে ফার্মারদের নানাবিধ পরামর্শ প্রদান করতে চেষ্টা করি।ইতোমধ্যে আমার ইউটিউব চ্যানেল ১ লক্ষাধিক সাবস্ক্রাইব অর্জন করায় ইউটিউব থেকে চ্যানেলটি ভেরিফাইড হয়েছে।